বৈশ্বিক উত্তেজনার মধ্যেই ফ্রান্সের পারমাণবিক প্রতিরোধ বাহিনীর মহড়া
ফ্রান্সের সামরিক বাহিনী তাদের পারমাণবিক প্রতিরোধ সক্ষমতা আরও জোরদার করতে বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু করেছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ফ্রান্স তার প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও সুসংহত করতে চায়, যা দেশটির নিরাপত্তা কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
ফরাসি সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই প্রশিক্ষণে দেশটির সামরিক বিমান, সাবমেরিন এবং ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনী অংশ নিচ্ছে। মূলত, এটি ফ্রান্সের পরমাণু নীতি অনুযায়ী আত্মরক্ষামূলক কৌশল উন্নয়নের একটি প্রচেষ্টা।
এই ধরনের মহড়া সাধারণত বছরে চারবার রাতে পরিচালিত হয়, কিন্তু এবার তারা দিনের বেলায় মহড়া শুরু করেন। ছয়টি A330 MRTT রিফুয়েলিং বিমানের টেকঅফ রেকর্ড করা হয়।
দেশকে দুটি ভাগে বিভক্ত করে এই মহড়ার পরিচালনা করা হয় এর একটি শত্রু পক্ষ এবং একটি মিত্র পক্ষ। একটি পক্ষের কাজ হল বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে ফেলা, উপযুক্ত রুট সংগঠিত করা এবং নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে পারমাণবিক হামলা চালানো। অন্য পক্ষকে পূর্বনির্ধারিত কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বস্তুগুলিকে রক্ষা করতে হবে এবং শত্রুর সাফল্য রোধ করতে হবে, ভূমি থেকে আকাশে এবং আকাশ থেকে আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের অনুকরণ করে।
গত ২৫শে মার্চ, ২০২৫ তারিখে দিনের শুরুতে দক্ষিণ ও মধ্য ফ্রান্সে বিমান বাহিনীর কাল্পনিক যুদ্ধ সংঘটিত করার মাধ্যমে মহড়া করা হয়। পারমাণবিক ওয়ারহেড সহ একটি কৌশলগত স্ট্রাইক মিসাইল দিয়ে সজ্জিত রাফালে বি যুদ্ধবিমান এ মহড়ায় ব্যবহার করা হয়।
মহড়ার সময়, আসল ASMP-A ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি, শুধুমাত্র তাদের আকার এবং ওজন সিমুলেটর ব্যবহার করা হয়েছিল। যা যুদ্ধের সময় অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে বিমান থেকে নিরাপদে ফেলে দেওয়া যেতে পারে।
এই অনুশীলনগুলি পারমাণবিক প্রতিরক্ষার বাহিনীর কর্মীদের সক্ষমতা পরীক্ষা করার জন্য, সাংগঠনিক ক্ষমতা উন্নত করার জন্য এবং ফ্লাইট ক্রু এবং বিমান চালনার প্রস্তুতি মূল্যায়ন করার জন্য পরিচালিত হয়, যারা সারা বছর ধরে এই ধরনের মিশন পরিচালনা করতে সক্ষম হতে পারে।
ফ্রান্স শেষ এ ধরনের মহড়া ২০২১ সালের এপ্রিলে পরিচালনা করেছিল, তবে এটি রাতে হয়েছিল এবং এতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে যুদ্ধের সরঞ্জামের ব্যবহার করা হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ছাড়া এক মাত্র ফ্রান্সের পারমাণবিক অস্ত্রাগারই স্বাধীন, রাজনৈতিক ও প্রযুক্তিগতভাবে যা দেশটিকে তৃতীয় পক্ষের অনুমোদন ছাড়াই এটি ব্যবহার এবং আধুনিকীকরণের অনুমতি আছে।
ফ্রান্স পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির অধীনে পাঁচটি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত পারমাণবিক রাষ্ট্রের মধ্যে একটি এবং এর নিজস্ব পারমাণবিক অস্ত্রাগার রয়েছে যা ফোর্স ডি ফ্র্যাপে ("স্ট্রাইক ফোর্সেস") নামে পরিচিত। জাতীয় নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য এই অস্ত্রাগারটি তৈরি করা হয়েছিল, যা চার্লস ডি গলের সময় থেকে ফরাসি প্রতিরক্ষা নীতির একটি মূল নীতি।
যুক্তরাজ্যের বিপরীতে, ফ্রান্স একটি সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত পারমাণবিক কর্মসূচি তৈরি করেছে যা উপকরণ নিষ্কাশন থেকে শুরু করে ওয়ারহেড এবং ডেলিভারি সিস্টেম উৎপাদন পর্যন্ত সমস্ত পর্যায়কে অন্তর্ভুক্ত করে।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অনুমান অনুসারে, ২০২৪ সাল পর্যন্ত, ফ্রান্সের কাছে প্রায় ২৯০টি পারমাণবিক অস্ত্রাগার রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ২৮০টি মোতায়েন করা হয়েছে এবং বাকিগুলি রিজার্ভে রয়েছে।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক বৈশ্বিক উত্তেজনা এবং প্রতিযোগিতামূলক প্রতিরক্ষা নীতির কারণে ফ্রান্সের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর প্রতিরক্ষা নীতিতেও এই প্রশিক্ষণের প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Parisreports / Parisreports
ভারতে ছয় বাংলাদেশি গ্রেপ্তার
আফগান সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষে নিহত ৩০
কানাডার ওপর বিরক্ত ট্রাম্প
নতুন ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালাল তুরস্ক
নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া থেকে তেল না কেনার সিদ্ধান্ত চীনের
পাকিস্তানে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে নদীতে বাঁধ দিচ্ছে আফগানিস্তান
সমঝোতার পথে ট্রাম্প-মোদি
এ বছর ২০০ জন বাংলাদেশিকে বৃত্তি দেবে রাশিয়া
ইথিওপিয়ায় লাইনচ্যুত হয়ে দুই ট্রেনের ভয়াবহ সংঘর্ষ
ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী
হংকংয়ে রানওয়ে থেকে ছিটকে সাগরে পড়ল প্লেন, নিহত ২
অনুমতি ছাড়া অনলাইনে নারীর ছবি পোস্ট