অল ইউরোপীয়ান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের জরুরি সংবাদ সম্মেলন

শেনজেন তথ্য ব্যবস্থা (SIS) নিয়ে ইউরোপে বাংলাদেশি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে সৃষ্টি হওয়া সংকটের বিষয়ে অল ইউরোপীয়ান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন (AEBA) এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে। সংগঠনটি দাবি করেছে, অনেক বাংলাদেশি বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও অযাচিতভাবে SIS ডেটাবেসে যুক্ত হয়েছেন, যার ফলে তাদের জীবন ও কাজের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, অনেকে অজ্ঞাত কারণে ‘ব্ল্যাকলিস্টেড’ হচ্ছেন এবং তাদের জীবন এখন আইনি লড়াইয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে AEBA  মহাসচিব কাজী এনায়েত উল্লাহ শেনজেন তথ্য ব্যবস্থা (SIS) বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরনের। AEBA অল ইউরোপের প্রবাসী বাংলাদেশীদের সবচেয়ে বড় একটি সামাজিক সংগঠন। এই সংগঠন সব সময় প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যানে কাজ করে যাচ্ছে তার এই ধারাবাহিকতায় শেনজেন তথ্য ব্যবস্থা (SIS)-এর সাম্প্রতিক জটিলতা নিয়ে আজকের জরুরি সংবাদ স্মমেলন আয়োজন করেন।  সংবাদ স্মমেলনে তিনি বলেন শেনজেন তথ্য ব্যবস্থায় কোনো নিরপেক্ষ তদন্ত ছাড়াই অনেক বাংলাদেশির নাম এলার্ট হিসেবে যুক্ত হয়েছে। এতে তাদের চাকরি, ভিসা রিনিউ এবং ইউরোপে চলাফেরায় গুরুতর সমস্যা তৈরি হয়েছে। ইউরোপের উন্নয়নে বাংলাদেশিরা ভূমিকা রাখছে। অথচ নিরাপত্তা ইস্যুতে তাঁদের অন্যায়ভাবে ভুক্তভোগী করা অমানবিক। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে এই অবস্থা অবিলম্বে তদন করে সংশোধনের দাবি জানান। এবং এই সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ইউরোপীয় দেশগুলোর সাথে কূটনৈতিকভাবে বিষয়টি উত্থাপন করবেন বলে জানান। এছাড়াও AEBA পক্ষ থেকে ইউরোপজুড়ে ভুক্তভোগী বাংলাদেশিদের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করা এবং একটি আইনি সহায়তা তহবিল গঠনের পরিকল্পনাও জানানো হয়েছে।  

শেনজেন তথ্য ব্যবস্থা (SIS) ইউরোপের ৩০টিরও বেশি দেশে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ এবং অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক অভিবাসীর অভিযোগ, কোনোরকম অপরাধমূলক রেকর্ড ছাড়াই তাদের SIS ডেটাবেসে ‘এলার্ট’ দেওয়া হচ্ছে, যার ফলে ভিসা নবায়ন, কাজ পাওয়া বা এক দেশ থেকে আরেক দেশে ভ্রমণে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশি, পাকিস্তানি ও আফ্রিকান কমিউনিটিগুলোর মধ্যে এই প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি ফকরুল আকম সেলিম, মাজারুল ইসলাম মিন্টু, সুব্রত ভট্টাচার্য শুভ, আজহার কবির বাবু, সাহলে আহমেদ, এমদাদুল হক স্বপন প্রমুখ। তারা বলেন, অনেক বাংলাদেশি পরিবার ইতিমধ্যে বাসস্থান হারিয়েছে, চাকরি থেকে বাদ পড়েছে এবং সন্তানদের স্কুলে ভর্তি আটকে গেছে। বক্তাদের মতে, এই সংকট শুধু বৈধতা বা কাগজপত্রের সমস্যা নয়, এটা একটি মানবাধিকার সংকট। AEBA ইউরোপের সব বাংলাদেশি কমিউনিটিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিষয়টি মোকাবেলার আহ্বান জানিয়েছে।